Bijoy Ministries

নতুন প্রজন্মকে নিরাপদ করার পথ

বর্তমান বিশ্বে অপরাধ, সহিংসতা এবং সাম্প্রদায়িক সংঘাত দ্রুতগতিতে বৃদ্ধি পাচ্ছে। এর মূল কারণ—মানুষের মাঝে আশা হারিয়ে যাওয়া। যখন ব্যক্তি বা জাতি তাদের আশা হারিয়ে ফেলে, তখন তারা নিজেরা পথ খুঁজে নিতে চেষ্টা করে, ফলাফল বা পরিণতি বিবেচনা না করেই। আশা হল দরিদ্র ও অসহায়দের জীবনের শেষ ভরসা। খ্রীষ্টের সুসমাচারই সেই চূড়ান্ত আশা। যিশু বলেন, “…তিনি আমাকে দরিদ্রদের কাছে সুসমাচার প্রচারের জন্য অভিষিক্ত করেছেন…” (লূক ৪:১৮)।

নতুন প্রজন্মকে নিরাপদ রাখার নির্দেশনা:

গীতসংহিতা ৭৮:৪-৮ আমাদের পরিষ্কারভাবে নির্দেশ দেয়, কীভাবে আমরা আগামী প্রজন্মকে সুরক্ষিত রাখতে পারি। আমাদের ইচ্ছাকৃতভাবে, সচেতনভাবে নতুন প্রজন্মের প্রতি দায়িত্বশীল হতে হবে। আমরা যা শিখেছি, যা আমাদের বাঁচতে এবং সফল হতে সাহায্য করেছে, তা তাদের কাছে পৌঁছে দিতে হবে।

নতুন প্রজন্মের কাছে পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা পৌঁছে দিতে হবে:

১. ঈশ্বরের আরাধনা- প্রশংসা:
আমাদের সন্তানদের জানাতে হবে যে, একজনই সত্য ঈশ্বর আছেন এবং তিনিই আমাদের আরাধনা-প্রশংসার যোগ্য। আজকের সমাজে বহু মিথ্যা দেবতার প্রচার রয়েছে, কিন্তু আমাদের অবশ্যই সত্য ঈশ্বরকে তাদের সামনে তুলে ধরতে হবে। এবং অবশ্যই তা পরিবারিক পরিমণ্ডল থেকে শুরু করতে হবে।

২. ঈশ্বরের শক্তি:
আমরা ঈশ্বরের শক্তিতেই বেঁচে আছি। আধুনিক প্রযুক্তি কখনও ঈশ্বরের শক্তির বিকল্প হতে পারে না। ঈশ্বর ছাড়া আমাদের কোনো অস্তিত্ব নেই। বাবা-মা তাদের জীবন দিয়ে সেই শক্তিকে তুলে ধরবেন। তাদের দৈনিক জীবন-যাত্রায় প্রতিদিন সেটিকেই প্রাধান্য দেবেন, যা সন্তানেরা দেখে শিখবে।
৩. ঈশ্বরের আশ্চর্য কাজ:

ঈশ্বর আজও আশ্চর্য কাজ করেন—তিনি উদ্ধার করেন, সুস্থ করেন, মুক্তি দেন, যোগান দেন এবং সময় উপযোগী আশীর্বাদ করেন। অতীতের মতো আজও তিনি একই ভাবে কাজ করেন। ইচ্ছাকৃত ভাবে সন্তানদেরকে এই অভিজ্ঞতার মধ্যে নিয়ে যেতে হবে।

৪. ঈশ্বরের সাক্ষ্য:
আমাদের জীবনে ঈশ্বরের কথা ও কাজের সাক্ষ্য তুলে ধরবে হবে। যখন ঈশ্বর আমাদের সঙ্গে কথা বলেন এবং আমরা তাঁর বাক্যের পরিপূর্ণতা দেখি, সেগুলি সাহসের সাথে জানাতে হবে। ঈশ্বরের সাক্ষ্য কখনও চেপে রাখা উচিত নয়। বাবা-মায়ের জীবনে যে সকল সাক্ষ্য ইতিমধ্যেই রয়েছে তা তাদের সন্তানদের কাছে শেয়ার করা দরকার। আশ্চর্যজনক ভাবে ক্ষমতার সাথে সেই সাক্ষ্য সন্তানদের জীবনে প্রভাব বিস্তার করবে।

৫. ঈশ্বরের আদেশ:
সৃষ্টির শুরু থেকেই ঈশ্বর আদেশ করেছেন এবং তাঁর আদেশ বা মুখের কথায় সমস্ত কিছু সৃষ্টি হয়েছে। ঈশ্বরই সমগ্র সৃষ্টির সর্বময় অধিপতি। পরিবারে ঈশ্বরের বাক্যের চর্চা থাকা দরকার। পরিবারই সেই প্রথম স্কুল যেখান থেকে সন্তানেরা ঈশ্বরের বাক্য শিখবে। তীমথিয়ের মা ও নানী তাকে ইচ্ছাকৃত ভাবে ছোট বেলা থেকেই ঈশ্বরের বাক্য শিক্ষা দিয়েছেন যা ঈশ্বরের মনোনীত জাতির জন্য ঈশ্বরের আদেশ ছিলো যেন তারা তাদের সন্তানদেরকে পথে চলতে, বিছানা থেকে উঠবার সময়, ঘরে বসে থাকবার সময় (অন্য ভাষায় সব সময়) ঈশ্বরের বাক্য শিক্ষা দেয়।

তবে সতর্কতা হলো:
বাইবেলের এই অংশ আমাদের সতর্ক করে দেয়—যদি আমরা এই বিষয়গুলো আমাদের সন্তানদের কাছে গোপন রাখি, তাহলে আমরা এমন একটি প্রজন্ম তৈরি করব যারা নিরাশ, যারা জানবে না ঈশ্বর আছেন, ঈশ্বর কাজ করেন এবং তারা এক বিদ্রোহী, বিভ্রান্ত ও অন্ধকারচিত্তের প্রজন্ম হয়ে উঠবে। আজকের সমাজের অবস্থা অনেকটাই এ রকম। আর এটি শুরু করতে হবে ঘর থেকে।

সমাধান ও আহ্বান:
পরিত্রাণ আমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর। যতক্ষণ কেউ শ্বাস নিচ্ছে, ততক্ষণ কেউই সেই পরিত্রাণের বাইরে নয়। ঈশ্বর আমাদের এখনও সময় দিয়েছেন এবং আমাদের হাতে দিয়েছেন সমাধান: যীশু খ্রীষ্টের সুসমাচার।

আসুন, আমরা আজই শুরু করি—আমাদের জীবন, আমাদের সাক্ষ্য, আমাদের কার্যক্রমের মাধ্যমে একটি প্রজন্মকে বদলে দিই। নতুন প্রজন্মকে নিরাপদ করি।

(ফ্রান্সিস কিশোর)

Scroll to Top