bijoyministries

খ্রীষ্টিয়ান ও সুখী দাম্পত্যের মধ্যে পার্থক্য

২০২১ সাথে করোনার কারণে আমি নিউজিল্যান্ডে আটকা পড়ি, আর তখন আমি সেখান থেকে এই চিঠিটা আমার স্ত্রীকে লিখেছিলাম

ঈশ্বর আমাদের দুজনকে একসাথে ডেকেছেন যেন আমরা আমাদের সম্পর্কের মধ্য দিয়ে তাঁকে সর্বোচ্চ সম্মান দিতে সক্ষম হই। আমি জানি আমাদের পরস্পরের দূর্বলতা আছে। নিশ্চয় আমাদের উভয়ের অনেক সবলতাও আছে। আমাদের দূর্বল দিকে বার বার না তাকিয়ে বরং সবল দিকগুলিতে মনযোগ করলে নিশ্চয় আমরা পরস্পরের আরো কাছাকাছি আসবার কারণ খুঁজে পাই, যা আমাদের সম্পর্ককে আরো শক্তিশালী ও দৃঢ় করে।

দূর্বলতাগুলি আমাদের জীবনেরই অংশ এটি আমরা বাদ দিতে পারি না। পৃথিবীর প্রতিটা মানুষই বিকলাঙ্গ বা অক্ষম। কেউই পরিপূর্ণ সুস্থ না। আমরা কেউ-ই সব কাজ সমান ভাবে পারি না। কোন না কোন জায়গায় বা অংশে দূর্বলতা রয়েছেই। আবার কোন কোন অংশে দারুণ সবল। তাই আমার বা তোমার একটি দূর্বল অংশের জন্য তাচ্ছিল্য বা অবহেলা করাটা নিতান্তই বোকামি।

এটি ঠিক শার্টের প্রথম বোতামের মত, যদি প্রথমটা ভুল হয় তবে পরবর্তী সকল বোতামগুলি ভুল হবে বৈকি! প্রাধান্য ঠিক রাখাটা গুরুত্বপূর্ণ। আমরা কেউ কাউকে সুখী করতে কাজ করছি না, তবে উভয়ের সম্পর্কের মাধ্যমে প্রভুকে সর্বোচ্চ সম্মান দিয়ে তাকে খুশী করছি। আর প্রভুর সেই খুশীর জোয়ারে আমরাও পরস্পরকে উপভোগ করছি।
আমি আজ এই দূর পরবাসে বসে তোমার উপস্থিতির অভাব দারুণ ভাবে বোধ করছি। যন্ত্রের মাধ্যমে তোমাকে দেখে সেই তৃষ্ণা ঠিক যেন মিটছে না। আসলে প্রত্যেক পুরুষেরই ঘর থেকে কিয়ৎ কালের জন্য একটু বাইরে দূরে কোথাও থাকা উচিত, তা হলে বোধহয় আমার মত তারা তাদের প্রিয় মানুষটির অভাব উপলব্ধি করতে পারে। ক্ষমা করতে শেখে।

আমি যে পরিবারের সাথে আছি তাদের ৪০ বছর আগে বিয়ে হয়েছে। বিয়ের ঠিক বিশ বছরের মাথায় স্বামীর মস্তিস্কে রক্ত-ক্ষরণ হয় এবং তিনি তার মস্তিস্কের অধিকাংশ সক্ষমতা হারিয়ে ফেলেন। শরীরের অনেক অংশই অক্ষম হয়ে যায়, কিন্তু ৩টি সন্তান নিয়ে সেই সময়ে স্ত্রী দিগুণ শক্তিতে পরিবারের হাল ধরেন এবং প্রতিটি সন্তানকে প্রতিষ্ঠিত করেন। আজ তারা শুধুই দুজন, বয়স্ক সব ছেলেমেয়েরা তাদেরকে ছেড়ে নিজ নিজ পরিবার নিয়ে ব্যস্ত, কিন্ত এখনও কত সুন্দর গোছানো তাদের পরিবার এবং পরিপাটি। পরস্পরের প্রতি কি দারুন শ্রদ্ধা ও ভালবাসা। স্বামীর মস্তিস্ক ও শরীর উভয়ই ধীরে ধীরে অনেকটা কাজ করতে সক্ষম হয়ে উঠেছে কিন্তু মজার ব্যাপার হচ্ছে তিনি নতুন কোন কিছু মনে রাখতে পারেন না এবং লম্বা সময় নিয়ে কোন কাজ করতে পারেন না। এই এখন একটি কথা বললো কিন্তু পরক্ষণেই ভুলে যান কিন্তু অতীতের সকল স্মৃতি তার বিলক্ষণ মনে আছে। আমি মাত্র তিন দিন এসেছি, অথচ শ-খানেক অতীতের সুখ স্মৃতি আমাকে শোনানো হয়ে গেছে তার। স্ত্রীর কি ভীষন ধৈর্য্য ও স্বামীর জন্য তার ভালবাসা, আমি বিমুগ্ধ। কোন সন্তান, নাতি-নাতনি কাউকেই দাদু বা বাবাকে অসম্মান করতে দেখিনি।

আজ বিরলে যাত্রা পথে আমার এই বয়স্ক আন্টির কাছে আঙ্কেল এর বিষয়ে জানতে চাইলাম। আন্টি খুবই আনন্দের সাথে সব কথা বললেন, সব কথা গুছিয়ে হয়তো বলতে পারবো না। তবে সারকথা হলো এই যে, ‘তোমার আঙ্কেলের আমার ও আমাদের সন্তানদের জীবনের জন্য দায়িত্ব শেষ হয়ে যায়নি, তাই তো ঈশ্বর তাকে এখনো আমাদের মাঝে রেখেছেন। আমি খুশি যে সে আমাদের মাঝে এখনও উপস্থিত আছে। আমি তার পাশে থাকতে পেরে সুখী বোধ করি।’

২ করিন্থিয় ২ঃ১৪-১৫পদ,
“ঈশ্বরকে ধন্যবাদ যে, আমরা খ্রীষ্টের সাথে যুক্ত হয়েছি বলে ঈশ্বর তাঁর জয়-যাত্রায় সব সময় আমাদের চালিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। খ্রীষ্টকে জানা একটা সুগন্ধের মত। ঈশ^র তাঁর জয়-যাত্রায় সেই সুগন্ধ আমাদের মধ্য দিয়ে সব জায়গায় ছড়িয়ে দেন। যারা উদ্ধার পাচ্ছে এবং যারা ধংস হয়ে যাচ্ছে তাদের কাছে ঈশ্বরের পক্ষে আমরা সত্যি সত্যিই খ্রীষ্টের সুগন্ধ।”

আমি সেই বাড়িতে সুগন্ধ পাচ্ছিলাম, তাদের জীবনে খ্রীষ্টের সুগন্ধ, যারা যীশুর মাধ্যমেই পরিবর্তীত হয়েছিল। আমি কখনই আমার অভিজ্ঞতার কথা ভুলবো না।

এখন আমাদের জন্য প্রশ্ন হলোঃ
   ১. আমাদের বাড়িতে এর গন্ধ কেমন?
   ২. লোকেরা যদি আমাদের ঘরে প্রবেশ করে, তাহলে কি খ্রীষ্টের সুগন্ধ তারা পায়?
   ৩. লোকেরা কি আমাদের দাম্পত্য সম্পর্কে খ্রীষ্টের সুগন্ধ পায়?

আমরা বিশ্বাস করি, মাত্র দুটি বিষয় যা একটি দাম্পত্য সম্পর্কের মধ্যে খ্রীষ্টের সুগন্ধ নিয়ে আসে -যা একটি দাম্পত্য সম্পর্ককে খ্রীষ্টিয়ান দাম্পত্যে পরিণত করে, এবং এর জন্য দরকার ঈশ্বরের সেই রূপান্তরকারী অনুগ্রহ।

১. একটি খ্রীষ্টিয়ান দাম্পত্যের একটি ভিন্ন উদ্দেশ্য থাকে।

আপনি যদি জানতে চান ‘কেন আপনারা বিয়ে করেছেন?’ তবে অধিকাংশ দম্পতীরাই এমন কিছু বলবে, “এই আর কি, আমরা প্রেমে পড়েছিলাম তাই …।” কিন্তু এই বক্তব্যের পিছনে তাদের বিয়ে করার আরো অনেক কিছুই রয়েছেঃ

তারা দীর্ঘদিন হয়তো প্রেম করেছেন, এবং পরবর্তীতে বিয়ে করেছেন।

 তারা বিয়ে করেছেন কারণ তারা তাদের শরীর শেয়ার করতে চায়।

 তারা বুড়ো হয়ে যাবার আগেই কিছু একটা করা দরকার তাই বিয়ে করেছেন।

 হয়তো ভবিষ্যত জীবন সুখের করার স্বপ্ন নিয়ে তারা একত্রিত হয়েছেন।

 তারা হয়তো চায় কেউ একজন তাদের যত্ম নিক।

 তারা হয়তো নিঃসঙ্গ এবং সাহচর্য প্রয়োজন।

 হয়তো রাতে একা একা ঘুম আসে না তাই পরিবার শুরু করেছেন।

 হয়তো প্রেমে ধরা খেয়েছেন এবং সবাই জোর করেই বিয়ে দিয়ে দিয়েছে।
 পারিবারিক অবস্থা থেকে বাঁচতে হয়তো বিয়ে করেছেন (বাবা-মায়ের অপব্যবহার, সৎ-মা) ইত্যাদি

বিয়ের এসব কারণগুলি ভালো, কিন্তু এর অধিকাংশ কারণই হচ্ছে ‘আমি’ কেন্দ্রিক। মানুষ নিজের কারনে বিয়ে করছে বা করে থাকে, ঈশ্বরকেন্দ্রীক উদ্দেশ্যে নয়।

আসলে, এটি সব জায়গায়, সব সংস্কৃতিতেই দেখা যায়। আমরা আত্মকেন্দ্রিক; এবং তাই আমাদের আত্মকেন্দ্রিক প্রবণতা, দাম্পত্য সম্পর্কের মধ্যে প্রবাহিত, আর দুজন আত্মকেন্দ্রিক মানুষ যখন দাম্পত্য নামক চুক্তিতে আবদ্ধ হয় তখন তারা থেকে যথেষ্ট ভালো আলোচনা করার চেষ্টা করে যাতে তারা সহাবস্থান করতে পারে।

একটি উচ্চমানের উদ্দেশ্য
কিন্তু দাম্পত্য সম্পর্কের জন্য আরও একটি উচ্চতর উদ্দেশ্য রয়েছে যা, গীতসংহিতা ৩৪ঃ৩ এ ভালো ভাবে বলা হয়েছেঃ “..আমার সংগে সদাপ্রভুর মহিমার কথা বলো; আসো আমরা একসাথে তাঁর নামকে গৌরবান্বিত করি!”

কোন এক প্রেমিক তার প্রেমিকাকে যখন প্রেমের প্রস্তাব দিয়েছিলেন তখন তিনি এটি বলেছিলেন। আমি মনে করি তিনি তার নিজের স্বাভাবিক স্বার্থপরতার বাইরে গিয়ে তার জীবনের একটি বৃহত্তর লক্ষ্য ঠিক করেছিলেন। আপনি যখন আপনার দাম্পত্য সম্পর্ককে একসাথে ঈশ্বরকে গৌরবান্বিত করার দিকে মনোনিবেশ করেন, তখন আপনার সম্পর্ক এমন একটি বাহন হয়ে উঠবে যার মাধ্যমে লোকেরা খ্রীষ্টের সুবাস পেতে পারে। এটি বিশ্বের কাছে সুসমাচারের বাহন হবে – আপনি ঈশ্বরের অনুগ্রহ, তাঁর দয়া, তাঁর ক্ষমা প্রদর্শন করবেন৷
আপনি যখন সত্যিই এই উদ্দেশ্যটি বুঝতে পারেন, তখন এটি সবকিছু পরিবর্তন করে। পৌল ট্রিপল্যান্ডে কথাটি আমার খুব ভালো লাগেঃ
“আমাদের ঊর্ধ্বমুখী এবং বহির্মুখী হয়ে জীবন যাপন করার জন্য তৈরি করা হয়েছিল, কিন্তু আমাদের অধিকাংশই অন্তঃমুখী জীবন যাপন করে। আমরা যখন অন্তর্মুখী (আমি কেন্দ্রিক) জীবন যাপন ছেড়ে ঊর্ধ্বমুখী ও বহির্মুখী জীবন যাপন শুরু করতে পারি, তখন জীবন বদলে যায়।”
যখন আমাদের বিবাহ/দাম্পত্য ঊর্ধ্বমুখী ও বহির্মুখী হয়ে উঠে, তখন সব কিছ্ইু বদলে যায়।

২. একটি খ্রীষ্টিয়ান দাম্পত্যে একটি ভিন্ন ধরনের ভালোবাসা থাকে।

এই ভিন্ন ধরণের ভালোবাসাটি আসলে দেখতে কেমন?

খ্রীষ্টিয়ান দাম্পত্য হচ্ছে খ্রীষ্ট ও মন্ডলীর মধ্যেকার সম্পর্কের মত, যেখানে আত্ম-ত্যাগ, একতা, ক্ষমা অপরিহার্য। এটি আত্মকেন্দ্রিক না বরং ঈশ্বরকেন্দ্রিক হবার মাধ্যমে শুরু হয়। এটি অন্তর্মুখী হওয়ার পরিবর্তে ঊর্ধ্বমুখী এবং বহির্মুখী। আরও সুনির্দিষ্টভাবে বলতে গেলে, এই ভালোবাসা আত্মত্যাগের, আমি কেন্দ্রিক নয়।

ফিলিপীয় ২ঃ১-৪ এ পৌল লিখেছেনঃ
তোমাদের মধ্যে কি খ্রীষ্টে উৎসাহ আছে? তোমাদের মধ্যে কি ভালবাসা থেকে উদ্ভুত সান্ত¡না পাওয়া যায়? তোমাদের মধ্যে কি কোন করুণা ও দয়া আছে? যদি এগুলি তোমাদের মধ্যে সত্যিই থাকে তবে তা আমায় অতিশয় আনন্দিত করবে, আমি চাই তোমরা একই বিশ্বাসে একমনা হও, পরস্পরের প্রতি ভালবাসায় সংযুক্ত থাকো, একই বিষয়ে বিশ্বাসী হয়ে সকলে একই আত্মায় সংযুক্ত থাকো এবং একই লক্ষ্য রেখে জীবনযাপন কর। তোমাদের মধ্যে যেন স্বার্থপরতা না থাকে বরং নম্রভাবে প্রত্যেকে নিজের থেকে অপরকে শ্রেষ্ঠ ভাবো। প্রত্যেকে কেবল নিজের বিষয়ে নয়, কিন্তু অপরের মঙ্গল কিসে হয় সে বিষয়েও লক্ষ্য রাখুক।

এই ধরনের ভালবাসা পৃথিবী যা জানে তার চেয়ে আলাদা।
এটা ধৈর্যশীল, দয়ালু, হিংসা করে না, গর্ব করে না, অহংকারী হয় না, অভদ্র নয়, নিজের সুবিধার চেষ্টা করে না, খিটখিটে বা রাগ করে না, অপরের মন্দ আচরণের কথা মনে রাখে না, খারাপ কিছুতে/অন্যায়ে আনন্দিত নয়, বরং যা কিছু সত্য তাতে আনন্দ করে, সব কিছুই সহ্য করে, সকলকেই বিশ্বাস করতে আগ্রহী, সব কিছুতে আশা রাখে, আর সব অবস্থায় স্থীর থাকে (১ করিন্থিয় ১৩ঃ৪-৭)।

আরেকটি উপায়ে এটি ভিন্ন ধরনের ভালোবাসা আর তা হলো এটি একটি ক্ষমাশীল ভালোবাসা, কঠোর হৃদয়ের ভালোবাসা নয়।

ইফিষীয় ৪ঃ২৬-২৭ আমাদের বলে,
“যদি রাগ করো তবে সেই রাগের কারনে পাপ করো না; সূর্য ডুববার আগেই তোমাদের রাগ ছেড়ে দিয়ো, আর শয়তানকে কোন সুযোগ দিয়ো না।”
আমরা যখন রাগ, বিরক্তি এবং তিক্ততা ধরে রাখি তখন আমরা শয়তানকে সুযোগ দিই, বরং ৩২পদ “তোমরা একে অপরের প্রতি দয়ালু হও, আর ঈশ^র যেমন খ্রীষ্টের মধ্য দিয়ে তোমাদের ক্ষমা করেছেন তেমনি তোমরাও একে অপরকে ক্ষমা করো।”

ক. খ্রীষ্টিয়ান দাম্পত্য একটি আত্ম-ত্যাগের প্রতিজ্ঞা
– স্বামী এবং যীশুঃ ঠিক যেমন যীশু নিজেকে মন্ডলীর জন্য উৎসর্গ করেছিলেন, স্বামীদের উচিত সেভাবে তাদের স্ত্রীদের প্রথমে রাখা এবং সম্পর্কের জন্য প্রতিদিন ত্যাগ স্বীকার করা।
– সত্যিকারের নেতৃত্বঃ দাম্পত্যে নেতৃত্ব দেওয়ার অর্থ হল সেবক হওয়া এবং নিঃস্বার্থভাবে ভালোবাসা, ক্ষমতা বা নিয়ন্ত্রণ চাওয়া নয়।

খ. সম্পর্কের জন্য ঈশ্বরের নকঁশা
– বর হিসাবে যীশুঃ যীশু মন্ডলীর কাছে একজন স্বামীর মতো, আর মÐলী হচ্ছে তাঁর কনের মতো৷
– ঐশ্বরিক প্রেমঃ এখান থেকে বুঝতে পারি যে, কিভাবে দাম্পত্য সম্পর্কে একে অপরকে ভালোবাসতে হয়; অপর ব্যক্তি অপূর্ণ হওয়া সত্বেও তার প্রতি দয়ালু, তার জন্য প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হওয়া ও সর্বোচ্চ মূল্য দেওয়া।

গ. স্বার্থপরতা অতিক্রম করা
– খ্রীষ্টের সাথে ঐক্যঃ যীশু মন্ডলীর সাথে যুক্ত এবং নিঃস্বার্থ ভাবে সব কিছু এর জন্য বিলিয়ে দিয়েছেন কারণ মন্ড তিনি অগ্রাধিকার দিয়েছেন।
– সাধারণ সমস্যাঃ দাম্পত্যে স্বার্থপরতা এবং ব্যক্তিগত এজেন্ডা বা আত্মকেন্দ্রিকতার উর্দ্ধে উঠে একে অপরকে ভালোবাসা দরকার।

ঘ. দাম্পত্য সম্পর্ক মন্ডলীকে প্রতিফলিত করে
– সাধারণ মিলের উর্দ্ধেঃ দাম্পত্য সম্পর্ক কেবলমাত্র দুজনের সাধারণ মিলের সম্পর্কে নয়, এটি একটি গভীর চুক্তির সম্পর্ক।
– অনুগ্রহের উপর নির্ভর করাঃ মন্ডলী যেমন যীশুর উপর নির্ভর করে ঠিক তেমনি ভিন্ন মতকে আলিঙ্গন করা এবং পারস্পরিক অনুগ্রহের উপর নির্ভর করার মাধ্যমে দাম্পত্যে সাফল্য আসে।

৩. একটি খ্রীষ্টিয়ান দাম্পত্য পবিত্র আত্মা দ্বারা নিয়ন্ত্রিত
আমাদের ভালোবাসা এই কারণে আলাদা কারন এটি আত্মা দ্বারা নিয়ন্ত্রিত মাংস দ্বারা নয়। আপনি নিজের ক্ষমতায় এটি করতে পারবেন না। আপনার জীবন সঙ্গীকে নিজের চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ মনে করেন কি? আপনার সঙ্গীকে ক্ষমা করুন যেমন ঈশ্বর আপনাকে ক্ষমা করেছেন? ধৈর্য, উদারতা দেখিয়ে আপনার সঙ্গীকে ভালোবাসুন এবং আপনার নিজের পথে জিদ না করে বরং পবিত্র আত্মাতে জীবন যাপনে অভ্যস্ত হওয়া।

যখন ব্যক্তি হিসাবে আমার ও আমাদের জীবনে সত্যিকার নতুন জন্মের অভিজ্ঞতা ও প্রতিদিন মূল্য দেবার মাধ্যমে খ্রীষ্টের সাথে জীবন যাপনে অভ্যাস থাকে তখন দাম্পত্যে আমাদের ভিন্ন ধরনের ভালোবাসা – এবং উদ্দেশ্য থাকবার একমাত্র উপায় হলো আমাদের জীবনে সত্যিকারের রূপান্তরের অভিজ্ঞতার মধ্যে দিয়ে যাওয়া।

খ্রীষ্টিয়ান দাম্পত্যে দুটি ভিন্ন বিষয়, উদ্দেশ্য ও ভালোবাসা, এটি এমন কিছু যা আমরা নিজেরা উৎপন্ন করতে পারি না। আমাদের জীবনে ঈশ্বরের রূপান্তরিত অনুগ্রহ ছাড়া এগুলি অসম্ভব এবং যখন আমরা আমাদের মধ্যে এই সত্যিকার রূপান্তরটি অনুভব করি, তখন বিশ্ব আমাদের সম্পর্কের মধ্যে খুব আলাদা কিছু লক্ষ্য করবে।

পরিশেষে,
দাম্পত্য হওয়া উচিত নিঃস্বার্থ ভালোবাসা, আত্ম-ত্যাগ এবং একতার সম্পর্ক, যেভাবে যীশুকে ভালোবাসেন এবং মন্ডলীকে নেতৃত্ব দেন। উভয় সঙ্গীর উচিত তাদের সম্পর্কের উদ্দেশ্যকে তাদের নিজস্ব আকাক্সক্ষার উপর অগ্রাধিকার দেওয়া, একটি শক্তিশালী এবং দীর্ঘস্থায়ী বন্ধনকে গড়ে তোলা। এই আধ্যাত্মিক লেন্সের মাধ্যমে দাম্পত্যকে দেখার মাধ্যমে, দম্পতিরা পারস্পরিক শ্রদ্ধা এবং ভালবাসার উপর ভিত্তি করে একটি অর্থবহ এবং দীর্ঘস্থায়ী সম্পর্ক গড়ে তুলতে পারে

লেখকঃ ফ্রান্সিস কিশোর

ফ্রান্সিস ও নয়োমী ২৩ বছর বিবাহিত জীবন যাপন করছেন, ঈশ্বর তাদেরকে দুটি ছেলে দিয়ে আশীর্বাদ করেছেন। তারা উভয়েই বিগত ১৫ বছর যাবৎ দাম্পত্য সম্পর্ক ও প্যারেন্টিং সম্পর্কে সেমিনার, প্রশিক্ষন ও কনফারেন্সে ফ্যাসিলিটেশন করে আসছেন। তারা যৌথ ভাবে রূপান্তরিত পিতৃ-মাতৃত্ব ও উদ্দেশ্য-প্রণোদীত দাম্পত্য সম্পর্ক বিষয়ে দুটি বই লিখেছেন। 

Scroll to Top